আলা হযরত শাহ ইমাম আহমদ রেজা খান ফাযিল বেরলভী রহিমাহুল্লাহ'র উপর ব্রিটিশ দালাল হওয়ার অপবাদের খন্ডন:
আলা হযরত শাহ ইমাম আহমদ রেজা খান ফাযিল মুহাদ্দিসে ব্রেরেলভী কুদ্দাস আল্লাহ সিররাহু ও তিনার উপর ব্রিটিশ দালাল হওয়ার অপবাদের খন্ডন
আলা হযরত ইমাম মাওলানা আহমদ রেজা খানের দাদা , মাওলানা রেজা আলী খান (আলাইহির রাহমাহ) ছিলেন একজন মহান যোদ্ধা। তিনি ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে ইংরেজ দখলদারদের বিরুদ্ধে জেনারেল বখত খানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন।
তিনি ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে জমাদিউল আওয়াল মাসে ইন্তেকাল করেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ব্রিটিশ সরকার তাঁর মাথার ওপর ৫০০ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। ১৮৫৭ সালের যুদ্ধের পর তিনি গোপনে জীবনযাপন করতেন।
ব্রিটিশ বিরুদ্ধী আন্দোলনে আলা হযরত এর পিতা ( নকী আলী খান) এর ভূমিকা
মুহাম্মদ হানিফ খান রিজভী বেরলভী নকী আলী খান (রহঃ)-এর একটি গ্রন্থের ভূমিকায় লেখেন—
“তিনি ব্রিটিশ শাসনকে ঘৃণা করতেন এবং আজীবন ইংরেজদের বিরোধিতা করে গেছেন। ব্রিটিশ শাসন উপড়ে ফেলতে তিনি নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে গেছেন এবং কলমের মাধ্যমে মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে লেখনীকে কাজে লাগিয়েছেন। এই বিষয়ে চাঁদা শাহ হুসাইনি লেখেন: 'মাওলানা রেজা আলী খান তাঁর জিহাদি বক্তৃতা ও লেখনীর জন্য ব্রিটিশদের মধ্যে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ইংরেজরা তাঁর প্রচেষ্টাকে এবং তাঁর জিহাদের উদ্দীপনাকে ভয় পেত। তাঁর পুত্র মাওলানা নকী আলী খানও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জিহাদে সক্রিয় ছিলেন এবং তিনি উলামায়ে কেরামের মধ্যে উচ্চ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। এ দিক থেকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তাঁর বিস্তৃত ও কল্যাণময় অবদান ছিল।'”
(শামস আল-তাওয়ারীখ, উসূল আল-রশাদ লিকামাহ মাবানী আল-ফাসাদ, পৃষ্ঠা ২২)
ভারত থেকে ইংরেজদের তাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভারতের ওলামায়ে কেরাম একটি “জিহাদ কমিটি” গঠন করেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জিহাদের ফতোয়া জারি করেন। এই ফতোয়া জারিকারীদের মধ্যে অগ্রগণ্য ও প্রথম ব্যক্তি ছিলেন মাওলানা রেজা আলী খান। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন নাম উল্লেখযোগ্য, যার মধ্যে একজন ছিলেন মাওলানা নকী আলী খান।
(মিশআল রাহ – ব্রিটিশ দখলদারদের কাহিনী - আবদুল হাকিম আখতার শাহজানপুরী, প্রথম অধ্যায়: ১৮৫৭ সালের সংঘর্ষের প্রভাব, পৃষ্ঠা ১২৬; উসূল আল-রশাদ, পৃষ্ঠা ২৩)
মাওলানা নকী আলী খান ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জিহাদরত মুজাহিদদের জন্য ঘোড়া পাঠাতেন। তাঁর ভাষণ ও খুতবায় তিনি জনগণকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও জিহাদে উদ্বুদ্ধ করতেন। বেরেলির জনগণ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এই জিহাদে সফল হন, যার ফলে ব্রিটিশরা বাধ্য হয়ে বেরেলি থেকে পালিয়ে যায়।
(হায়াত মুফতী আজম, উসূল আল-রশাদ, পৃষ্ঠা ২৩)
আলা হযরত এর ছেলে মাওলানা হামিদ রেজা খানের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভূমিকা ( এবং আলা হযরত এর আংশিক ভূমিকা) :
মুহাম্মদ মাসঊদ আহমদ লেখেন,
“মাওলানা হামিদ রেজা খান, যিনি মাওলানা আহমদ রেজা খানের পুত্র, তিনি মুরাদাবাদে তাঁর সভাপতির ভাষণে ব্রিটিশ সভ্যতা ও সংস্কৃতির সমালোচনা করেন। ১৯২৫ সালে মুরাদাবাদে তাঁর এই স্পষ্ট ও নির্ভীক সমালোচনা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তা অধ্যয়নের দাবি রাখে। তিনি ১৩৪৩ হিজরির ২০ থেকে ২৩ শা'বান / ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ থেকে ১৯ মার্চে অনুষ্ঠিত آل ইন্ডিয়া সুন্নি কনফারেন্সে বলেন।”
(গুনাহ বে গুনাহ, পৃষ্ঠা ২০)
মুহাম্মদ মাসঊদ আহমদ আরও লেখেন,
“১৩৩৭ হিজরি / ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে খিলাফত আন্দোলনের সূচনার সময়, যখন ব্রিটিশ ভারত সরকারবিরোধী আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল, তখন ইমাম আহমদ রেজা খান মাওলানা আবদুস সালামের আমন্ত্রণে জবলপুরে গিয়েছিলেন। সেখানে অবস্থানকালে ইমাম আহমদ রেজা মাঝে মাঝে ভ্রমণে বের হতেন। মাওলানা আবদুস সালামের পুত্র মুফতি মুহাম্মদ বুরহানুল হক জবলপুরি, যিনি বর্তমানে নব্বই বছরের বেশি বয়সী, তিনি লিখেছেন:
“একদিন আসরের নামাজের পর মাওলানা এক বগিতে চড়ে গনকারেজ ফ্যাক্টরির দিকে ভ্রমণে বের হন। ফ্যাক্টরি থেকে একদল ব্রিটিশ সেনা তাদের কোয়ার্টারের দিকে যাচ্ছিল। তাঁদের দেখে আলা হযরত বললেন, ‘এই বদভাগারা তো পুরোপুরি বানর।’”
(গুনাহ বে গুনাহ, পৃষ্ঠা ২৪; ইকরাম ইমাম আহমদ রেজা, পৃষ্ঠা ৯১)
তিনি আরও বলেন:
“উপরোক্ত প্রমাণ ও ঘটনার আলোকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ইমাম আহমদ রেজা ছিলেন না ব্রিটিশদের মিত্র বা শুভাকাঙ্ক্ষী, বরং তিনি ইংরেজদের শাসনব্যবস্থা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি, শিক্ষাব্যবস্থা, চিন্তাধারা এমনকি চেহারাও পছন্দ করতেন না।”
(গুনাহ বে গুনাহ, পৃষ্ঠা ২৫)
এরপর আসি নদওয়াতুল উলামা এর কথা,
আলা হযরত শুরুতে নদওয়াতুল উলামা এর সাথে ছিলেন কিন্তু উনি কেন নদওয়ার সঙ্গ ত্যাগ করেন এই কথাটা কি অপব্যাখ্যাকারীরা দিতে পারবে?
আলা হযরত নদওয়াদের ব্রিটিশ প্রীতি দেখে ওদের বিরুদ্ধে যান এবং ওদের বিরুদ্ধে কিতাব ও লিখেন।
এবং আলা হযরত ত তিনি যিনি কিনা এই বলেছিলেন যে,
** শার্ট প্যান্ট পড়া মাকরুহ **
★ আলা হযরত ও ব্রিটিশ আলাদতের কাহিনী :
১৩৩৪ হিজরি / ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে, ইমাম আহমদ রেজা খান (আলাইহির রাহমাহ)-কে ব্রিটিশ আদালতে হাজির হতে সমন পাঠানো হয়। তবে তিনি সেখানে উপস্থিত হতে অস্বীকার করেন। এর কারণ ছিল— তাঁর বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
[আর সেই বিরোধী কে ছিলেন?
তিনি ছিলেন দেওবন্দি আলেম আশরাফ আলী থানভীর বড় ভাই।]
এই প্রসঙ্গে ইমাম আহমদ রেজা তাঁর শাগরিদ ও খলিফা মাওলানা আব্দুস সালাম জবলপুরী (ইন্তিকাল: ১৩৭২ হি. / ১৯৫৩ খ্রিঃ)-কে একটি চিঠিতে লিখেন, যা তাঁর আরেক শাগরিদ ও খলিফা মাওলানা আব্দুল বাকী বুরহানুল হক জবলপুরী (ইন্তিকাল: ১৪০৫ হি. / ১৯৮৫ খ্রিঃ) “ইকরাম-ই-ইমাম আহমদ রেযা” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন:
“অসহায় হয়ে, এরা এখন ওহাবীদের পথ অবলম্বন করতে চায় — খ্রিস্টানদের (অর্থাৎ ব্রিটিশদের) কাছে নালিশ করে।
দুআ করুন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা তাদের এই অভিশপ্ত উদ্দেশ্য এবং অপবিত্র কুমতলব থেকে বাঁচান — যা তারা এক বৈঠক করে সম্মিলিতভাবে ঠিক করেছে অপকার ও অপমানের উদ্দেশ্যে। আমীন।
وَحَسْبُنَا اللّٰهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ।”
[ এই চিঠি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ইমামের বিরোধীদের অভ্যাস ছিল ব্রিটিশদের, অর্থাৎ খ্রিস্টান শাসকদের দ্বারস্থ হওয়া। অথচ ইমাম আহমদ রেজা নিজে ব্রিটিশদের কোনো গুরুত্ব দিতেন না, না তাদের আইনের, না তাদের ধর্মবিশ্বাসের, বরং তিনি তাদের বিশ্বাসকে বাতিল ও হাস্যকর প্রমাণ করেছিলেন। ]
এই একই ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দ আলতাফ আলী, করাচির ডেইলি জঙ্গ পত্রিকায় লিখেন:
“হযরতের এক অঙ্গীকার ছিল যে, তিনি কখনো ব্রিটিশ আদালতে উপস্থিত হবেন না। এ বিষয়ে সবচেয়ে বিখ্যাত একটি ঘটনা আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি। এটি ঘটেছিল বদায়ুঁর ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে এক ইখতিলাফের সময়। জুমার দ্বিতীয় আজান মিনবারের কাছে দেওয়া উচিত, না মসজিদের আঙ্গিনায় — এই মাসআলায় মতবিরোধ হয়, এবং বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বদায়ুঁর কিছু লোক বাদী হয়ে শহরের আদালতে অভিযোগ দায়ের করে। আদালত থেকে মাওলানা সাহেবের নামে সমন আসে, কিন্তু তিনি আদালতে যাননি। গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা দেখা দিলে, হাজার হাজার মুরীদ তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হন। শুধু জড়োই হননি, তাঁরা আশেপাশের গলিতে তাঁবু গেড়ে অবস্থান নেন, দিনরাত পাহারা দিতে থাকেন — এই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে যে, যখন পর্যন্ত আমরা সবাই জীবন উৎসর্গ না করি, ততক্ষণ পর্যন্ত আইনের কোনো প্রতিনিধি মাওলানার গায়ে হাত দিতে পারবে না।”
যদি ইমাম আহমদ রেজা খান ব্রিটিশদের অনুগত হতেন, তাহলে তিনি ব্রিটিশ আদালতের প্রতি এত ঘৃণা পোষণ করতেন না এবং নিজের গ্রেপ্তারের ঝুঁকি নিতেন না; বরং স্বতঃস্ফূর্তভাবে আদালতে উপস্থিত হতেন।
সৈয়দ আলতাফ আলী আরও নিশ্চিত করেন:
“রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে হযরত মাওলানা আহমদ রেজা খান সাহেব নিঃসন্দেহে স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন। তিনি ইংরেজ ও তাদের সরকারকে গভীরভাবে ঘৃণা করতেন। এমনকি তিনি বা তাঁর পুত্র মাওলানা হামিদ রেজা খান এবং মুফতি মুস্তফা রেজা খান সাহেব — কেউই কখনও এমন কোনো খেতাব নেওয়ার চিন্তাও করেননি, যেমন 'শামসুল উলামা' ইত্যাদি। তাঁরা শাসকদের বা তৎকালীন গভর্নরদের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ বা সম্পর্ক রাখতেন না।”
[ এ কথা স্মরণ রাখতে হবে, সৈয়দ আলতাফ আলী ছিলেন ইমামের যুগের সমসাময়িক ব্যক্তি এবং তাঁর জানাজায় অংশগ্রহণকারী। তাঁর চাচা সৈয়দ আইয়ুব আলী রিজভী ইমামের মুরীদ ছিলেন এবং ২৬ বছর ইমামের সান্নিধ্যে ছিলেন। যদি ইমাম আহমদ রেজা খানের মনে ব্রিটিশদের প্রতি সামান্যতমও ভালোবাসা থাকত, তবে তা সৈয়দ আলতাফ আলীর দৃষ্টি এড়িয়ে যেত না।]
যেমন আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, আলা হযরত ইমাম আহমদ রেজা খান (আলাইহির রাহমাহ) কখনোই ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর প্রতি কোনো ভালোবাসা বা সম্মান পোষণ করতেন না। তিনি কখনোই ব্রিটিশদের কোনো সামরিক সহায়তা দেওয়ার অনুমতিও দেননি।
মাওলভী মঈনুদ্দীন আজমেরী, যিনি অসহযোগ আন্দোলনের একজন নেতা ছিলেন — যদিও আলা হযরত সেই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন — তবুও তিনি তাঁর গ্রন্থ “কালিমাতুল হক”-এ লিখেছেন:
“অসহযোগ আন্দোলনের একটি প্রস্তাব ছিল — প্রস্তাব নম্বর ৫ — যেটি উভয় বুযুর্গ, আলা হযরত এবং আশরাফ আলী থানভী, উভয়েই গ্রহণ করেছিলেন। আর তা হলো — ব্রিটিশ সরকারকে কোনো ধরনের সামরিক সহায়তা না দেওয়া।”
[ যদি আলা হযরত সত্যিই ব্রিটিশদের সমর্থক বা অনুগত হতেন, তবে কেন তিনি তাদের সামরিক সহায়তা পাওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিতেন? ]
আলা হযরত ইমাম আহমদ রেজা খান (আলাইহির রাহমাহ) ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতি ঘৃণা ও অবজ্ঞা পোষণ করতেন। তিনি রাজাদের ছবি সংবলিত ডাকটিকিটগুলো খামে উল্টোভাবে লাগাতেন — যাতে তাদের প্রতি তাঁর অসম্মান প্রকাশ পায়।
সৈয়দ আলতাফ আলী লিখেছেন:
>“মরহুম সৈয়দ হাজী আয়ুব আলী রিজভীর বর্ণনা অনুযায়ী, হযরত মাওলানা সবসময় খামের উপর ডাকটিকিট উল্টো লাগাতেন; অর্থাৎ কুইন ভিক্টোরিয়া, এডওয়ার্ড সপ্তম ও জর্জ পঞ্চম— এদের মুখ নিচের দিকে থাকত।"
আলা হযরত শুধু খামেই নয়, পোস্টকার্ডেও এমন করতেন। তিনি পোস্টকার্ড উল্টো করতেন যাতে রাজপরিবারের চেহারা নিচের দিকে থাকে এবং এরপর ঠিকানা লিখতেন।
এ বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায়— একটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পোস্টকার্ডে এক চতুর্থাংশ আনা মূল্যের ডাকটিকিটে কুইন ভিক্টোরিয়ার ছবি ছিল, যা ২৪ মে, ১৮৯৬ / ৯ জিলহজ্জ, ১৩১৩ হিজরিতে (ইয়াওমুল আরাফা) মাওলানা নজির আহমদ রামপুরী (রহঃ)-এর নামে পাঠানো হয়েছিল, যিনি আহমেদাবাদের মাদরাসা-ই তায়্যিবাহর শিক্ষক ছিলেন। তা আহমেদাবাদে পৌঁছায় ২৭ মে।
যদি আলা হযরত ব্রিটিশদের সমর্থক হতেন, তাহলে তিনি তাদের রাজাকে সম্মান জানাতেন, কিন্তু বাস্তবতা ছিল একেবারে বিপরীত। বরং তিনি এতটাই সচেতন ছিলেন যে উচ্চ মূল্যের ডাকটিকিট ব্যবহারে আপত্তি করতেন, যদিও তাতে ব্রিটিশদের লাভ খুবই সামান্য ছিল।
মাওলানা সৈয়দ জাফরুদ্দীন বিহারী তাঁর গ্রন্থ “হায়াতে আলা হযরত”-এ মাওলভী মুহাম্মদ হুসাইন মীরাঠীর সূত্রে একটি ঘটনা বর্ণনা করেন:
মীরাটের এক বিত্তবান ও ধার্মিক ব্যক্তি, যিনি এগারোবার হজ করেছেন — জনাব হাজী আলাউদ্দিন সাহেব, তিনি একটি মাসআলার ফয়সালা নিতে আলা হযরতের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন এবং মাওলভী সাহেবকে অনুরোধ করেন সঙ্গ দেওয়ার জন্য, কারণ তিনি আগে আলা হযরতের সাক্ষাৎ পাননি।
সাক্ষাৎকালে আলা হযরত তাঁকে প্রশ্ন করেন:
“আপনি কেন উচ্চ মূল্যের ডাকটিকিট দিয়ে চিঠি পাঠান?”
এরপর আলা হযরত আরও জিজ্ঞেস করেন:
“অকারণে খ্রিস্টানদের (অর্থাৎ ব্রিটিশদের) টাকা পাঠানো কীভাবে বৈধ হতে পারে?”
এই প্রশ্নের পর হাজী সাহেব নিজের ভুল স্বীকার করেন এবং প্রতিজ্ঞা করেন— এমন কাজ আর করবেন না।
এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, আলা হযরত ইমাম আহমদ রেজা খান ছিলেন একনিষ্ঠ ব্রিটিশবিরোধী। তিনি শুধু বক্তব্য বা ফতোয়ার মাধ্যমে নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কাজেও — যেমন ডাকটিকিট ব্যবহারে — ব্রিটিশদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতেন।
এমন একজন মানুষকে ব্রিটিশ অনুগত বলা, ইতিহাস ও বাস্তবতার জঘন্য বিকৃতি ছাড়া আর কিছুই নয়।
আবার আসি আলা হযরত এর বহুল বিকৃত করা ফতুয়ার কথা যেখানে আলা হযরত ব্রিটিশ ভারত কে দারুল ইসলাম বলছেন ও জিহাদ জায়েজ না বলছেন।
এখন যারা আলা হযরত এর এই ফতুয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে আলা হযরত কে মুরতাদ বলতে চায় তাদের কাছে আমার প্রশ্ন
আপনার ভারতে অবস্থান করা আকাবিরিদের কি গুরদায় সেই দম আছে যে মোদির বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিবে? কারণ ব্রিটিশ ভারতে দেওবন্দিদের ও নদওয়াদের ব্রিটিশরা অর্থ দিয়ে সাহায্য করে, মুসলমানরা তাদের শরীয়া আইনের ব্যাবহার করতে পারতো কিন্তু মোদির আমলে মসজিদে নামাজ পড়াই ভয়ের কারণ হয়ে দাড়াইছে৷ এই মূহুর্তে যদি আপনার আকাবিররা জিহাদের ডাক না দেয় তাহলে আপনার আকাবিররা মুরতাদ
ইতি
জবাব প্রদানে ,
মুহাম্মদ হাচিবুর রহমান চৌধুরী আজিজি শায়েস্তানগরী মালেকী
সংগ্রহে: জিহাদ মাহমুদ
এই লিখাটি একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে নেওয়া। মূল পোস্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন